বঙ্গ আমার! জননী আমার কবিতার প্রশ্ন উত্তর | Class 6 Bengalibanga amar janani amar question Answer

 

  বঙ্গ আমার! জননী আমার


নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও।

. দ্বিজেন্দ্রলাল রায় রচিত দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম লেখো।

উত্তর: দ্বিজেন্দ্রলাল রায় রচিত দুটি কাব্যগ্রন্থের নাম আলেখ্য এবং ত্রিবেণী।

. কবি দ্বিজেন্দ্রলালের কবিতার মূল সুর কী ছিল?

উত্তর: কবি দ্বিজেন্দ্রলালের কবিতার মূল সুর ছিল দেশাত্মবোধ।

নীচের বিশেষ্যগুলিকে বিশেষণে বিশেষণগুলিকে বিশেষ্যে রূপান্তরিত করো।

মলিন, মধুর, আসন, দৈন্য, প্রণত

উত্তর: মলিন (বিশেষণ)-মালিন্য, মলিনতা (বিশেষ্য) মধুর (বিণ.)-মাধুর্য, মধুরতা, মাধুরী (বি.) আসীন (বিণ.)-আসন (বি.) দীন (বিণ.)-দৈন্য (বি.) প্রণত (বিণ.)-প্রণতি (বি.)

নীচে কতগুলি উপসর্গযুক্ত শব্দ দেওয়া হল। শব্দগুলি থেকে উপসর্গ আলাদা করে দেখাও।

উপনিবেশ, অশোক, আলোক, প্রণত

উপনিবেশ -উপ

অশোক -
আলোক -

প্রণত- প্র

নীচের বাক্যগুলির উদ্দেশ্য বিধেয় অংশ ভাগ করে দেখাও।

. কেন গো মা তোর মলিন বেশ?

উত্তর: উদ্দেশ্য-মা তোর বেশ

বিধেয়-কেন গো (হয়) মলিন?

. অশোক যাঁহার কীর্তি ছাইল গান্ধার হতে জলধি শেষ।

উত্তর: উদ্দেশ্য-অশোক

বিধেয়-যাঁহার কীর্তি ছাইল গান্ধার হতে জলধি শেষ।

. একদা যাহার বিজয়-সেনানি হেলায় লঙ্কা করিল জয়।

উত্তর: উদ্দেশ্য-একদা যাহার বিজয়-সেনানি

বিধেয়-হেলায় লঙ্কা করিল জয়।

. ন্যায়ের বিধান দিল রঘুমণি।

উত্তর: উদ্দেশ্য-রঘুমণি

বিধেয়-ন্যায়ের বিধান দিল।

. নবীন গরিমা ভাতিবে আবার ললাটে তোর।

উত্তর: উদ্দেশ্য-নবীন গরিমা

. বিধেয়-ভাতিবে আবার ললাটে তোর।

[] একইরকম অর্থযুক্ত শব্দ কবিতা থেকে খুঁজে নিয়ে লেখো।

গৌরব, সুর, মুক্তি, নতুন, জলধি

গৌরব-গরিমা

সুর-তান

মুক্তি-মোক্ষ

নতুন-নবীন

 জলধি-অর্ণব

[] নিম্নলিখিত প্রত্যেক ব্যক্তি প্রতিটি স্থান সম্পর্কে দু-চারটি বাক্য লেখো।

বুদ্ধ, রঘুমণি, নিমাই, চন্ডীদাস

বুদ্ধ: প্রাচীন ভারতের বিখ্যাত দার্শনিক বৌদ্ধধর্মের প্রতিষ্ঠাতা গৌতম বুদ্ধ ৪৮০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে নেপালের লুম্বিনি নগরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বৌদ্ধধর্মের প্রতিষ্ঠা করে সারা পৃথিবীতে প্রেম সম্প্রীতির বাণী প্রচার করেছিলেন।

রঘুমণি: শ্রীচৈতন্যদেবের সময়ে রঘুমণি নবদ্বীপে জন্মগ্রহণ করেন। ইনি ন্যায়শাস্ত্রে সুপন্ডিত ছিলেন।

নিমাই: বাংলায় বৈয়ব ধর্ম প্রসারে নিমাই বা চৈতন্যদেবের ভূমিকা অপরিসীম। ব্রাহ্মণ, চন্ডাল, শূদ্র-সমাজের যে-কোনো ধর্ম বর্ণের মানুষমাত্রেই হরির নামকীর্তন করবার অধিকারী-এই কথা তিনিই প্রচার করেন। চৈতন্যদেব জাতিভেদ, বর্ণভেদ মানতেন না।


চন্ডীদাস : মধ্যযুগের অন্যতম জনপ্রিয় কবি চন্ডীদাস। 'চন্ডীদাস' নামের অনেক কবির সন্ধান যুগে পাওয়া যায়, যেমন-বড়ু চণ্ডীদাস, দীন চন্ডীদাস, দ্বিজ চণ্ডীদাস। বড়ু চণ্ডীদাস নাম যাঁর, তিনি বিখ্যাত 'শ্রীকৃয়কীর্তন' কাব্য রচনা করেন।

. নীচের প্রশ্নগুলির কয়েকটি বাক্যে উত্তর লেখো।


. কবি দেশকে কী কী নামে সম্বোধন করেছেন?

উত্তর: কবি দেশকে জননী, ধাত্রী, মা, দেবী, সাধনা, স্বর্ণ-ইত্যাদি নামে সম্বোধন করেছেন।

. "কেন গো মা তোর মলিন বেশ"-'মা' বলতে কবি কাকে বুঝিয়েছেন? তাকে 'মা' বলা হয়েছে কেন?

উত্তর: কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায় 'মা' বলতে দেশমাতা ভারতবর্ষকে বুঝিয়েছেন।

* মা যেমন আমাদের ধারণ করেন, রক্ষা করেন, ঠিক তেমনি দেশজননীও তার সন্তানদের আগলে রাখেন, তাদের সুরক্ষা আশ্রয় দান করেন। এই কারণেই, কবি তাকে 'মা' বলে সম্বোধন করেছেন।

. 'মা'-এর বেশ মলিন কেশ রুক্ষ কেন?

উত্তর: দেশমাতার বেশ মলিন কেশ বৃক্ষ তার কারণ তিনি এখন পরাধীন। অত্যাচারী শাসকদের শোষণে তাঁর গৌরব সমৃদ্ধি লোপ পেয়েছে।

. অশোক কোথায় কোথায় তাঁর প্রভাব বিস্তার করেছিলেন?

উত্তর: অশোক গান্ধার প্রদেশ থেকে দক্ষিণ ভারত পর্যন্ত তাঁর প্রভাব বিস্তার করেছিলেন।

. "অর্ধ-জগৎ ভক্তি-প্রণত চরণে যাঁর"-'অর্ধ-জগৎ' বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন? কার চরণে তা প্রণত হয়েছে?

 উত্তর: 'অর্ধ-জগৎ' বলতে সারা বিশ্বের অর্ধেক অংশের কথা বোঝানো হয়েছে।

* 'অর্ধ-জগৎ' গৌতম বুদ্ধের চরণে প্রণত হয়েছে।

 

. "যুদ্ধ করিল প্রতাপাদিত্য"-প্রতাপাদিত্য কে ছিলেন? তিনি কাদের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিলেন?

উত্তর: প্রতাপাদিত্য ছিলেন বাংলাদেশের বিখ্যাত 'বারো ভূঁইয়া' বা 'বারোজন রাজা' একজন। যশোর, খুলনার বিস্তৃত অঞ্চলে তাঁর সাম্রাজ্য বিস্তৃত ছিল।

প্রতাপাদিত্য মোগলদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে বঙ্গদেশে তাদের আধিপত্য বিস্তার রুখেছিলেন।

. "ধন্য আমরা"-'আমরা' বলতে কাদের বোঝানো হয়েছে? আমরা কখন নিজেদের ধন্য বলে মনে করতে পারি?

উত্তর: 'আমরা' বলতে পরাধীন ভারতের নাগরিকদের কথা বোঝানো হয়েছে।

আমরা নিজেদের ধন্য বলে মনে করব তখন, যখন প্রত্যেকে বীর প্রতাপাদিত্য, চৈতন্যদেব, চন্ডীদাস কিংবা সম্রাট অশোক বা গৌতম বুদ্ধের আদর্শকে ঠিকমতো অনুসরণ করতে পারব। 

. নবীন গরিমা কীভাবে ললাটে ফুটে উঠবে?

উত্তর: নবীন গরিমা ললাটে ফুটে উঠবে যখন দেশমাতার ত্রিশ কোটি সন্তানেরা মিলে তাদের জননীর হারানো গৌরব সমৃদ্ধি ফিরিয়ে আনবে।

. আমরা কীভাবে বঙ্গজননীর দুঃখ, দৈন্য, লজ্জা দূর করতে পারি?

উত্তর: তিরিশ কোটি জনগণের মিলিত চেষ্টায় দেশজননীকে পরাধীনতা থেকে মুক্তি দিয়ে তা করা সম্ভব।

নীচের প্রশ্নগুলির নিজের ভাষায় উত্তর দাও।

. "যদিও মা তোর দিব্য আলোকে ঘিরে আছে আজ আঁধার ঘোর"-কবির কেন মনে হয়েছে যে বঙ্গজননীকে আঁধার ঘিরে আছে?

উত্তর: দেশমাতা বঙ্গমাতা উভয়েই তখন ছিলেন পরাধীন। অত্যাচারী বিদেশি শাসকদের শোষণে ভারতবর্ষের ঐশ্বর্য গৌরব হারিয়ে গিয়েছিল। বদলে অন্ধকারপূর্ণ অন্যায় অনাচারের রাজত্ব বিস্তৃত হয়েছিল। ভারতমাতাকে কবি 'দেবী', 'সাধনা' বলে সম্বোধন করেছেন। তিনি পবিত্রতার প্রতীক। কিন্তু অশুভ শক্তির শোষণে বঙ্গজননীকে ঘিরে ধরেছে ঘন অন্ধকারের বলয়। এমনটাই কবির ধারণা।

 

সঠিক উত্তরটি বেছে নিয়ে লেখো:

. ন্যায়ের বিধান কে দিয়েছেন?

Ø রঘুপতি

Ø রঘুমণি

Ø রঘুবর

Ø রঘুনাথ

. বারো ভূঁইয়ার একজন হলেন-

Ø প্রতাপাদিত্য

Ø রানা প্রতাপ

Ø পুরু

Ø শশাঙ্ক

. বৌদ্ধ ধর্মের প্রতিষ্ঠাতা কে?

Ø শাক্যগুরু

Ø বুদ্ধ

Ø মহাবীর

Ø কণিষ্ক

. কার কীর্তি গান্ধার থেকে জলধি অবধি প্রসারিত?

Ø কণিষ্ক

Ø অশোক

Ø চন্দ্রগুপ্ত

নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও।

. বুদ্ধদেব বিশ্বে কীসের বাণী প্রচার করেন?

উত্তর: গৌতম বুদ্ধ বিশ্বে মুক্তি বা মোক্ষলাভের বাণী প্রচার করেন।

. তিরিশ কোটি জনতার মিলিত কণ্ঠ কীসের ডাক দেয়?

উত্তর: তিরিশ কোটি জনতার মিলিত কণ্ঠ 'আমার দেশ' বলে ডেকে ওঠে।

. বঙ্গমাতার 'নয়ন' কেমন?

উত্তর: বঙ্গমাতার 'নয়ন' শুকনো।

. কবি দ্বিজেন্দ্রলালের গান কী নামে পরিচিত?

উত্তর: কবি দ্বিজেন্দ্রলালের গান দ্বিজেন্দ্রগীতি নামে পরিচিত।

. কার কীর্তি 'গান্ধার হতে জলধি শেষ' পর্যন্ত বিস্তৃত?

উত্তর: সম্রাট অশোকের কীর্তি 'গান্ধার হতে জলধি অবধি বিস্তৃত।

. রঘুমণি কীসের বিধান দেন?

উত্তর: রঘুমণি ন্যায়ের বিধান দেন।

নীচের সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যাভিত্তিক প্রশ্নগুলির উত্তর দাও:

. বঙ্গবাসীর সামুদ্রিক বাণিজ্য বিস্তারের ভাবনা 'বঙ্গ আমার জননী আমার।' কবিতার কোন পঙক্তিতে ফুটে উঠেছে?

উত্তর: বঙ্গবাসীর সামুদ্রিক বাণিজ্য বিস্তারের ভাবনা দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের 'বঙ্গ আমার। জননী আমার।' কবিতার 'একদা যাহার অর্ণব-পোত ভ্রমিল ভারত-সাগরময়' পঙ্ক্তিটিতে ফুটে উঠেছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কবি বিজয়চন্দ্র মজুমদারের পরামর্শে দ্বিজেন্দ্রলাল তাঁর কবিতায় এই অংশটি যুক্ত করেন।

. কোন্ বিপ্লবীর কারামুক্তির পর তাঁর অভ্যর্থনা সভায় দ্বিজেন্দ্রলালের 'বঙ্গ আমার! জননী আমার।' কবিতাটি গান হিসেবে পরিবেশিত হয়?

উত্তর: দেশবরেণ্য বাগ্মী, বিপ্লবী বিপিনচন্দ্র পালের কারামুক্তির পর তাঁর অভ্যর্থনা সভায় ইভনিং ক্লাবের সভ্যদের দ্বারা প্রকাশ্যে দ্বিজেন্দ্রলালের 'বঙ্গ আমার! জননী আমার' কবিতাটি গান হিসেবে পরিবেশন করেন।

. দ্বিজেন্দ্রলাল রায় তাঁর কোন্ নাটকে 'বঙ্গ আমার! জননী আমার!' গানটি যুক্ত করতে চেয়েছিলেন?

উত্তর: দ্বিজেন্দ্রলাল রায় তাঁর 'নূরজাহান' নাটকের প্রথম অভিনয়ে পরেই, নাটকের যে অংশে নূরজাহান বঙ্গদেশে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন, সেখানে গানটি ড্রামের বাদ্যধ্বনি সহযোগে রাখতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তা সম্ভব হয়ে ওঠেনি।

 

নীচের রচনাধর্মী প্রশ্নগুলির উত্তর দাও:

. "কেটে যাবে মেঘ"-কোন্ মেঘ কীভাবে কেটে যাবে?

উত্তর: আকাশে জমা ঘন, কালো মেঘ আমাদের দুর্যোগ বা বাড়ের সংকেত এনে দেয়। তেমনি দেশ জাতির পরাধীন জীবনে অত্যাচারী শাসকের শোষণ বিপদের আভাস বয়ে নিয়ে এসেছিল। ভারতজননীর গৌরব মুছে গিয়েছিল। দেশমাতা, বঙ্গমাতার এই করুণ অবস্থা বদলাতে, কবির মতে, সমস্ত দেশবাসীকে এগিয়ে আসতে হবে। তাদের মিলিত অংশগ্রহণেই দুরবস্থা দৈন্যের এই কালো মেঘ কেটে যাবে বলে তিনি মনে করেন।

. "কেন-গো মা তোর ধূলায় আসন, কেন-গো মা তোর মলিন বেশ?"-দেশজননীর এই দৈন্যদশার কারণ কী বলে তোমার মনে হয়?

উত্তর: ভারতবর্ষ তখন পরাধীন। যেখান থেকে গৌতম বুদ্ধ মুক্তিলাভের বাণী প্রচার করা শুরু করেছিলেন সেখানেই আজ অত্যাচারী শাসকেরা থাবা বসিয়েছে। পরাক্রমী সম্রাট অশোকের কীর্তিও সকলে যেন ভুলতে বসেছে। ন্যায়, আদর্শ-সবকিছুই যেন মুছে গিয়েছে। সব মিলিয়ে বিদেশি ব্রিটিশ শাসকদের শোষণে দেশমাতার দশা শোচনীয় রূপ নিয়েছিল।

 

 

 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url